Homeকবিতাসেলিনা মওলা‘র তিনটি কবিতা

সেলিনা মওলা‘র তিনটি কবিতা

আজকে ভীষণ হুলুস্থুল ঘুমোতে চাই।।
বৃষ্টি বিকেল, কালো মেঘে লুকোতে চাই।
মধুরতম পায়ের আওয়াজ ,
মধুর দৃষ্টি অপুর্ব সাজ,
ডাঙ্গর মেয়ের নিলজ্জ লাজ-
ঘরের কোণে স্মৃতির দেরাজ!
আদরবিহীন চাদরে ভাঁজ;
মনে রাখার বিলাস রেওয়াজ-
ছুঁয়ে দেখার এ স্বপ্নবাজ–
নষ্ট হৃদয়, ভ্রষ্ট আশার শেষ বিকেলটি ফুরোতে চাই,
বৃষ্টি সন্ধ্যা, তারার আভা, অচ্ছুৎ ওম জুতোতে চাই।।

যে কিশোর দুপুর রোদে দাঁড়িয়ে রুবি রায়ের জন্য প্রতীক্ষা করতো,
বহুবছর দেখিনা তাকে।
ছিপের মত হঠাৎ লম্বা, একটু বিনত লজ্জিত কিশোর।
ঘাড়ের চুলগুলো কী একটু কোঁকড়ানো ছিল?
রোদে পোড়া গায়ের কালো রঙ … উঁহু শ্যামলাই হবে।
হয়তো ফর্সাই ছিল টকটকে,
রূপকথার দুধকুমারের মতই।
গভীর কালো টানা চোখ ছিল কি?
কিভাবে জানবে লোকে,
সারাক্ষণ ঝুঁকে ফুটপাতের ধুলো খুঁড়তো যে,
ফিতে খোলা জুতোয়।
তাতে আবার কপাল জুড়ে উড়তো অবাধ্য চুল
এলোমেলো দাঁড়িয়ে একাই।
কেমন যেন গাছের মত
ছায়া, আবছায়া, ধোঁয়া।
হাতে কলেজের বই থাকতো — নাকি ডায়েরি?
হয়তো বইয়ের সাথে ডায়েরিও ছিল।
কবিতা লিখতো সেই ডায়েরিতে?
নাকি ভুল বানানে মনের যত কথা।
স্বপ্নের কথা, প্রেয়সীর কথা, রুবি রায়ের কথা…

আজকাল মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে যায়।
বেলকুনীতে বসে ভাবি, এখন যদি দুপুর হতো?
নিস্তব্ধ নির্জন রাস্তায় একটি কিশোর ছেলেকে খুঁজতাম। ডেকে জিগেস করতাম, “এতদিন কোথায় ছিলে?
গির্জার ঘন্টা ওটা, নুপুরের সুর নয় ছেলে।
তোমার ডায়েরিটা আমাকে দাও,
ভুল বানানগুলো ঠিক করে দেই।
হোক তা সস্তা কবিতা, স্বপ্নের আকাশকুসুম,
কিংবা আমি।”

প্রিয়তম, ওইখানে সহস্র ঝাড়বাতি–
এখানে ঘুটঘুটে অন্ধকার ;
এখানে নিদ্রাহীন বিষাদ রাত্রি,
মৃত সৈনিকের বিশ্রী হাহাকার।।
এখানে লাবণ্য নেই–
কিন্নরকন্ঠ নেই,
সুক্ষ্ম সৌন্দর্য নেই,
চোখভরা কথা নেই,
ভাঙা বিগ্রহে বাসি ফুল দেয়
পুরোনো পৃথিবীর সে পুরোনো মেয়েই ।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

সেলিনা মওলা (Selina Moula)
সেলিনা মওলা
ইতিহাস ভুলে যাবো আজ, আমি কি তেমন সন্তান ? যখন আমার জনকের নাম শেখ মুজিবুর রহমান ll

এই লেখকের আরো লেখা

এই ক্যাটাগরির সর্বাধিক পঠিত

সাম্প্রতিক মন্তব্য