কিছু না বলা কথা , কিছু অপেক্ষা
উম্মে সামসাদ জেরীন
এমন অনেক রাত গেছে , আমি বারান্দায় বসে আকাশের কোজাগরী চাদেঁর জোসনা,
একা গায়ে মেখেছি।
মধ্য রাতে ঐ যে উন্মুখ ডাহুকটা
একটানা করুন সুরে ডেকে চলছিল ,
গলির কালো বিড়াল দু’টোও তখন ছিল।
ফটিকের চায়ের দোকান তখনও খোলা ছিল।
আর আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি তোমার জন্য।
মাঝ রাতে তোমার হাতে হাত রেখে
ঝিঁঝিঁ পোকার ডাক শুনবো বলে।
নিঃশব্দে অপেক্ষা করেছি
জোনাক পোকার আলোয় তোমায় স্নান করাবো বলে।
অথচ দেখো , এর কোনটাই হবেনা জানি।
তারপরও কেন এই অপেক্ষা , বলতে পারো ?
কোন একসময় তুমি বলেছিলে,
বৃহঃস্পতিবার রাতটা আমাদের।
সারারাত গল্প করবো,
রাতের নিস্তব্ধতা উপভোগ করবো একসঙ্গে।
অথচ দেখো , কত বৃহস্পতিবার এলো আর গেল,
আমাদের আর রাতের নিস্তব্ধতায় গল্প বোনা হলো না।
দুই তিনটা বসন্ত আগে,
আমার এক বন্ধু মজা করে বলেছিল,
জীবনে কি দেখেছিস?
ঢাকায় থাকিস, কিন্তু লালবাগের কেল্লা গিয়েছিস কখনও, কিংবা আহসান মঞ্জিল?
সোনারগাঁও এ গিয়েছিস?
যেখানে আমাদের দেশের ইতিহাস ঐতিহ্য কথা বলে।
চল , তোকে একদিন নিয়ে যাবো সেই জামদানি পল্লীতে।
তোর লেখার কিছু উপকরণ পেলেও পেতে পারিস সেখানে।
এরপর আর সেই বন্ধুর সময় হয়নি,
আর আমারও সব অদেখা থেকে গেল।
কিন্তু তোমার জন্য আমি প্রতিক্ষার বাগান তৈরী করবো।
সেখানে একেক ঋতুতে একেক ফুল ফুটবে।
একদিন বাগানের গাছগুলো বৃদ্ধ হবে,
আর ফুল দিতে পারবে না।
তিন রাস্তার মোড়ে যে শতবর্ষি বটগাছটা ঠাঁয় দাঁড়িয়ে আছে,
যুগের পর যুগ, কারো ফেরার প্রতিক্ষায়,
কেউ জানে না সে কথা।
আমার প্রতিক্ষার কথাও না’হয় অজানা থাকবে আমজনতার কাছে।